বাজারে গেলে রুই মাছ বারিতে নিয়ে আসবে না এমন লোক হয়তো খুব কমি আছে। গ্রামে বলুন আর শহরে প্রতিটা পরিবারে প্রিয় মাছের তালিকায় রুই মাছ সবার শীর্ষে। আজ আমরা রুই মাছের উনিক রেসিপি নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন শুরু করি
রুই মাছ রান্নার বিশেষ উপকরণ
১। রুই মাছ
২। হলুদ গুড়া/ হলিদ বাটা
৩।কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুড়া
৪। নুন
৫। সরষের তেল
৬। ধোনে পাতা কুঁচি
৭। জিরে বাটা
৮। গোটা গোলমরিচ
১০। কাচা মরিচ
১১। রসুন
১২। আদা
১৩। টমেটো
১৪। এলাচ
১৫। পানি
১৬। গরম মসলা
রুই মাছ রান্নার নিয়ম
ধাপ ১: মাছ ম্যারিনেট করা
রান্নার জন্য ১ কেজি রুই মাছের টুকরো নিতে হবে (চাকতি বা গোল টুকরো হলে ভালো)। প্রথমে মাছের টুকরোগুলো ম্যারিনেট করতে হবে। ম্যারিনেশনের জন্য নিচের উপকরণগুলো মিশিয়ে মাছের সঙ্গে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন:
- ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
- ১ চা চামচ লাল মরিচ গুঁড়ো
- পরিমাণমতো লবণ
- ২ টেবিল চামচ সরষের তেল
এইভাবে মাখিয়ে ১৫ মিনিটের মতো রেখে দিন, যাতে মসলা মাছের ভেতরে ভালোভাবে ঢুকে যায়।
ধাপ ২: মসলা পেস্ট তৈরি
এবার মসলা কারির জন্য একটি ঘন ও ঝাল মসলা পেস্ট তৈরি করতে হবে। এজন্য একটি ব্লেন্ডারে নিচের উপকরণগুলো নিয়ে ভালোভাবে বেটে পেস্ট বানান:
- ৪ চা চামচ কালো সরষে
- ৯ চা চামচ গোটা ধনে
- ২ চা চামচ গোটা জিরা
- ৫ চা চামচ গোল মরিচ
- ৫–৬টি কাঁচা লঙ্কা
- ২টি মাঝারি আকৃতির রসুনের কোয়া (খোসা ছাড়ানো)
সব উপকরণ একসঙ্গে সামান্য জল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। পেস্টটি যেনো মসৃণ হয়, সেটা খেয়াল রাখবেন।
অবশ্যই! নিচের অংশটুকুও সম্পূর্ণভাবে রিরাইট করে একদম ইউনিক ও পরিষ্কারভাবে লিখে দিচ্ছি, যেন সহজে বুঝতে পারা যায় এবং আগের লেখার সঙ্গে আলাদা হয়:
ধাপ ৩. রুই মাছ রান্নার প্রস্তুতি ও তেল ব্যবহার
এই রুই মাছের মসলা কারি তৈরিতে কোনো অতিরিক্ত জল ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই — কেবলমাত্র আগে তৈরি করা মসলা পেস্টই যথেষ্ট হবে। রান্নার জন্য একটি বড় সাইজের কড়াই বা ফ্রাইপ্যান নিতে হবে। এবার তাতে প্রায় ২০০ মিলিলিটার সরষের তেল ঢেলে ভালোভাবে গরম করে নিন। সম্ভব হলে তেলের পরিমাণ একটু বেশি রাখবেন, এতে মাছ এবং মসলা ভাজা আরও ভালো হবে।
💡 টিপস: মাছ ভাজার সময় কড়াইতে তেল যদি কম থাকে, তাহলে মসলা তলায় লেগে যেতে পারে এবং মাছও সহজে চিটকে যাবে। তাই তেলের পরিমাণে কার্পণ্য করবেন না — অল্প একটু বেশি ব্যবহার করলেই এই সমস্যা আর হবে না।
ধাপ ৪. মাছ ভাজার সঠিক পদ্ধতি
তেল গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে সামান্য লবণ ছিটিয়ে দিন। এতে মাছ ভাজার সময় টুকরোগুলো কড়াইতে লেগে যাবে না। এরপর একে একে মাছের টুকরোগুলো তেলে দিয়ে মাঝারি আঁচে ভালোভাবে ভাজতে থাকুন।
প্রথমে একটি পাশ সোনালী রঙে ভাজা হলে, টুকরোগুলো আস্তে করে উল্টে অন্য পাশটিও ভেজে নিন। সব টুকরো এইভাবে ভেজে নিলে, মাছ ভাঙবে না এবং সুন্দরভাবে ফ্রাই হবে।
যদি অনেকগুলো মাছ থাকে, তাহলে একসাথে না দিয়ে ধাপে ধাপে ভাজা ভালো — এতে মাছের গঠন ঠিক থাকবে এবং ভাজার মানও ভালো হবে।
ধাপ ৫. মাছ ভাজার পর মশলার প্রস্তুতি
সব মাছ ভাজা হয়ে গেলে, ওই একই তেলে কিছুটা চারফালি পেঁয়াজ ভেজে নিতে হবে। এরপর সেই তেলেই দিতে হবে:
- ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
- ১.৫ চা চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়া
এই মশলাগুলো তেলের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিন। এতে গ্রেভির রঙ দারুণ সুন্দর ও আকর্ষণীয় দেখাবে।
ধাপ ৬. মসলা পেস্ট রান্না করা
এখন আগে তৈরি করে রাখা মসলা পেস্টটিকে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে কড়াইতে ঢেলে দিন। তেলে দেওয়ার পর থেকেই মশলাটি ভালোভাবে রান্না হতে শুরু করবে। যতক্ষণ না তেল মশলা থেকে আলাদা হয়ে আসে, ততক্ষণ নাড়াচাড়া করতে থাকুন।
এবার একটি টমেটো কুচি করে মশলার মধ্যে দিন এবং ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন। মশলা যত ভালোভাবে কষানো হবে, রান্নার স্বাদ ততটাই জমে উঠবে।
ধাপ ৭. মশলা কষানো ও জল দেওয়ার ধাপ
যখন দেখবেন টমেটো একেবারে গলে গেছে এবং তেল মশলা থেকে আলাদা হয়ে এসেছে, তখন বুঝবেন মশলা ভালোভাবে কষানো হয়ে গেছে। এই পর্যায়ে, ১০–১৫ মিনিট সময় লাগতে পারে।
এখন যদি দেখেন গ্রেভি বেশি ঘন হয়ে গেছে, তাহলে প্রয়োজন মতো গরম জল দিয়ে দিন। তবে খেয়াল রাখবেন — বেশি জল দেবেন না, এতে স্বাদ薄 হয়ে যেতে পারে।
টিপস: যদি ঝোল বেশি পছন্দ হয়, তাহলে আরেকটু জল যোগ করে দিন, নাহলে ঘন করে রাখুন।
ধাপ ৮: মাছ ও মশলা দিয়ে রান্নার শেষ পর্ব সম্পন্ন
গ্রেভি ভালো করে ফুটে উঠলে এর মধ্যে ভেজে রাখা মাছগুলো দিয়ে দিন। মাছগুলো দিয়ে গ্রেভির সাথে ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। দেখবেন, ধীরে ধীরে গ্রেভি কিছুটা কমে আসবে এবং উপর দিয়ে তেল উঠে আসবে।
এবার দিন –
- ১ চা চামচ গরম মসলা
- কয়েকটি চেরা কাঁচা লঙ্কা
- অল্প কিছু ধনেপাতা কুচি
সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ব্যস, আমাদের সুস্বাদু রুই মাছের ইউনিক রেসিপি (Rui Macher uniq recipe) একদম প্রস্তুত!
সতর্কীকরণ: ছোট বাচ্চা/ শিশু দের মাছ খাওয়ানর সময় সতর্ক থাকবেন।


One Comment on “রুই মাছের ইউনিক রেসিপি”